মি'রাজে কিভাবে সালাত ফরয হলো <২৪২ পরিচ্ছেদ [বুখারী শারীফ]> - ইসলাম আমাদের ধর্ম

বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

মি'রাজে কিভাবে সালাত ফরয হলো <২৪২ পরিচ্ছেদ [বুখারী শারীফ]>

২৪২ পরিচ্ছেদঃ মিরাজে কিভাবে সালাত ফরয হলো ঃ

ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আমার কাছে আবূ সুফিয়ান ইবন হারব (রা) হিরাকল-- এর হাদিসে বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি এ কথা বলেছেন যে, নবী (সাঃ) আমাদেরকে সালাত , সত্যবাদিতা ও চারিত্রিক পবিত্রতার নির্দেশ দিয়েছেন। 


৩৪২-ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (র) ... আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন ঃ আবূ যার (রা) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ
 আমার ঘরের ছাদ খুলে দেওয়া হল । তখন আমি মক্কায় ছিলাম। তারপর জিবরাঈল (আ) এসে আমার বক্ষ বিদীর্ণ করলেন। আর তা যমযমের পানি দিয়ে ধুইলেন। এরপত্র হিকমত ও ঈমানের পরিপূর্ণ একটি সোনার পাত্র নিয়ে আসলেন এবং তা আমার বক্ষে ঢেলে দিয়ে বন্ধ করে দিলেন। তারপর হাত ধরে আমাকে দুনিয়ার আসমানের দিকে নিয়ে চললেন।

 যখন দুনিয়ার আসমানে পৌছালাম , তখন জিব্রাঈল (আ) আসমানের রক্ষককে বললেন, দরজা খোল। তিনি বললেন কে? উত্তর দিলেন ঃ আমি জিব্রাঈল। আবার জিজ্ঞাসা করলেন , আপনার সঙ্গে আর কেউ আছে কি? তিনি বললেন হ্যা, আমার সঙ্গে মুহাম্মদ(সা) । তিনি আবার বললেন , তাকে কি আহবান করা হয়েছে? তিনি উত্তরে বললেন , হ্যা। তারপর আসমান খোলা হল আমরা প্রথম আসমানে উঠলাম । সেখানে দেখলাম, এক লোক বসে আছেন এবং অনেকগুলো মানুষের আকৃতি তার ডান পাশে রয়েছে এবং অনেক গুলো মানুষের আকৃতি তার বাম পাশে রয়েছে। যখন তিনি ডান দিকে তাকাচ্ছেন , হাসছেন আর যখন বা দিকে তাকাচ্ছেন তিনি কাঁদছেন । তিনি বললেন ঃ খোশ আমদেদ , হে পুণ্যবান নবী ! হে নেক সন্তান! আমি জিব্রাঈল (আ) কে জিজ্ঞাসা করলাম , ইনি কে? তিনি বললেন ঃইনি আদম (আ) । আর তাঁর ডানে ও বামে তার সন্তান দের রূহ । ডান দিকের লোকেরা জান্নাতী আর বাম দিকের লোকেরা জাহান্নামী।  এজন্য তিনি ডান দিকে তাকালে হাসেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদেন ।

 তারপর জিব্রাঈল (আ) আমাকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় আকাশে উঠলেন । সেখানে উঠে রক্ষককে বল্লেনঃ দরজা খোল । তখন রক্ষক প্রথম আসমানের  রক্ষকের আনুরূপ প্রশ্ন করলেন । তারপর দরজা খুলে দিলেন । আনাস (রা) বলেনঃ এরপর আবূ যার বল্লেনঃ তিনি (নবী (সা) ) আসমান সমূহে আদম (আ) ইদ্রীস (আ) , মূসা (আ) , ঈসা .(আ) ও ইব্রাহীম (আ) কে পেলেন । আবূ যার (রা) তাদের অবস্থানের কথা নির্দিষ্ট করে বলেননি। কেবল এতটুকু বলেছেন যে, নবী(সা) আদম (আ) কে প্রথম আসমানে এবং ইব্রাহীম (আ) কে ষষ্ঠ আসমানে পেয়েছেন। আনাস (রা) বলেনঃ যখন জিব্রাঈল (আ) নবী(সা) ইদ্রীস (আ) এর পাশ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন , তখন ইদ্রীস (আ) বলেন ,খোশ আমদেদ!পুণ্যবান নবী এবং নেক ভাই! আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে ? জিব্রাঈল (আ) বললেন ইনি ইদ্রিস(আ) ।

 তারপর আমি মূসা (আ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম । তিনি বললেন ঃ খোশ আমদেদ!পুণ্যবান নবী এবং নেক ভাই! আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে ? জিব্রাঈল (আ) বললেন ইনি মূসা (আ)। তারপর আমি ঈসা (আ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম । তিনি বললেন ঃ খোশ আমদেদ!পুণ্যবান নবী এবং নেক ভাই! আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে ? জিব্রাঈল (আ) বললেন ইনি ঈসা (আ)। তারপর আমি ইব্রাহীম  (আ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম । তিনি বললেন ঃ খোশ আমদেদ!পুণ্যবান নবী এবং নেক ভাই! আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে ? জিব্রাঈল (আ) বললেন ইনি ইব্রাহীম  (আ)।

 ইবন শিহাব (র) বলেন যে, ইবন হাযম আমাকে খবর দিয়েছেন ইবন আব্বাস ও আবূ হাব্বা আনসারী (র) উভয়ে বলেনঃ নবী (সা) বলেছেন ঃ তারপর আমাকে আর ওপরে উঠানো হল, আমি এক সমতল স্থানে উপনীত হলাম, যেখান থেকে কলমের লেখার শব্দ শুনতে পেলাম । ইবন হাযম (র) ও আনাস ইবন মালিক (রা) বলেন ঃ নবী (সা) বলেছেন ঃ তারপর আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করে দিলেন । আমি এ নিয়ে প্রত্যাবর্তন কালে যখন মূসা (আ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম , তখন মূসা (আ) বললেন ঃ আপনার উম্মতের উপর আল্লাহ কী ফরয করেছেন? আমি বললাম পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। তিনি বল্লেনঃ আপনি আপনার রবের কাছে ফিরে যান , কারন আপনার উম্মত তা আদায় করতে সক্ষম হবে না । আমি ফিরে গেলাম । আল্লাহ পাক কিছু অংশ কমিয়ে দিলেন । আমি মূসা (আ) এর কাছে আবার গেলাম আর বললাম , কিছু অংশ কমিয়ে দিয়েছেন । তিনি বললেন আপনি আবার আমার রবের কাছে যান । কারণ আপনার উম্মত এও আদায় করতে সক্ষম হবে না। তখন আমি আবার গেলাম , তখন আল্লাহ বললেন ঃ এই পাঁচই ( সওয়াবের দিকে) পঞ্চাশ ( গণ্য হবে)।
 আমার কথার কোন পরিবর্তন নেই। আমি আবার মূসা(আ) এর কাছে আসলে তিনি আমাকে আবারো বললেন ঃ আপনার রবের কাছে যান । আমি বললাম, আবার আমার রবের কাছে যেতে আমি লজ্জাবোধ করছি । তারপর  জিব্রাঈল (আ) আমাকে সিদ্রাতুল মুনতাহা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। আর তখন তা বিভিন্ন রঙে ঢাকা ছিল, যার তাৎপর্য আমার জানা ছিল না। তারপর আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়া হল। আমি দেখলাম তাতে  মুক্তার হার রয়েছে আর তার মাটি কুস্তুরী । [বুখারী শারীফ]



৩৪৩-আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (র) ... উম্মু'ল মু'মিনীন 'আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআলা মুকীম অবস্থায় ও সফরে দুই রাক'আত সালাত ফরয করেছিলেন। পরে সফরে সালাত পূর্বের মত রাখা হল আর মুকীম অবস্থায় সালাত বৃদ্ধি করা হল। [বুখারী শারীফ] 

নতুন নতুন তথ্য পেতে আমদের ওয়েবসাইট টি হোম পেজ এ উপরে ফোলো বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনাদের মতামত আমাদের কমেন্টের মাধ্যেমে জানান।  



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন