জেনে নেই উযুর ফরয এবং সুন্নাত সমুহ এবং উযূ করার দু'আ- - ইসলাম আমাদের ধর্ম

বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০

জেনে নেই উযুর ফরয এবং সুন্নাত সমুহ এবং উযূ করার দু'আ-


উযূর ফরয ৪টি

১, সমস্ত মুখ একবার ধৌত করা । (সূরা মায়িদা, আয়াত নং-৬)
২, দুই হাত কনুইসহ একবার ধৌত করা।(সূরা মায়িদা, আয়াত নং-৬)
৩, মাথার এক চতুর্থাংশ ।
৪, উভয় পা টাখনুসহ একবার ধৌত করা।(সূরা মায়িদা, আয়াত নং-৬)
ফায়দাঃ উপরোক্ত চারটি কাজের কোন একটি না করলে বা এর মধ্যে এক চুল পরিমাণও শুকনা থাকলে উযূ সহীহ  হবেনা ।(প্রমানঃশামী,১ঃ৯১/ আল বাহারুর রায়িক,১ঃ৯/ হিদায়া,১ঃ১৬)

উযূর সুন্নাত সমুহ 

১, উযূর নিয়ত করা অর্থাৎ উযূকারী মনে মনে এই নিয়ত করবে যে, পবিত্রতা অর্জন করা ও নামায জায়েয হওয়ার জন্য আমি উযূ করছি।(সুরা বাবয়যনাহ, ৫/ বুখারি শারিফ, হাদিস নং-৬৬৮৯)
২, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে উযূ আরম্ভ করা । হাদিসে পাকে আছে , বিসমিল্লাহি ওয়ালা হামদুলিল্লাহি পড়ে উযূ করলে যতক্ষণ ঐ উযূ থাকবে , ফেরেশ্তাগণ তার নামে ততক্ষণ অনবরত সাওয়াব লিখতে থাকবে , যদিও সে কোন মুবাহ কাজে লিপ্ত থাকে।( নাসায়ী শরীফ , হাদিস নং-৭৮/ তাবারানী সাগীর, ১ঃ৭৩)
৩, উভয় হাত পৃথক ভাবে কব্জিসহ তিনবার ধোয়া । (বুখারী শারিফ, হাদিস নং -১৫৯)
৪,মিসওয়াক করা। যদি মিসওয়াক না থাকে তাহলে আঙ্গুল দ্বারা দাঁত মাজা মিসওয়াক অর্ধ হাতের চেয়ে বেশি লম্বা না হওয়া এবং গাছের ডাল হওয়া মুস্তাহাব।(মুসনাদে আহমাদ ,হাদিস নং-৯২১৬,১৩৯,৩৯৯০)
৫, তিনবার কুলি করা । (বুখারী শারিফ , হাদিস নং-১৮৫)
৬, তিনবার নাকে পানি দেওয়া এবং নাক সাফ করা । ( সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-১০৭৭)
৭, ততসঙ্গে প্রতিবারই নাক ঝাড়া । ( মুসলিম শারিফ , হাদিস নং-২৩৬)
৮, প্রত্যেক অঙ্গকে পূর্ণ ভাবে তিনবার করে ধোয়া। (বুখারী শারিফ ,হাদিস নং-১৫৯) এর জন্য তিন বারের বেশি পানি নিতে হলে নিবে ।
৯, দুই হাতে মুখ ধোয়া এবং মুখমন্ডল ধোয়ার সময় দাড়ি খিলাল করা।( তিরমিযী , হাদিস নং-৩১)
১০, হাত ও পা ধোয়ার সময় আঙ্গুল সমুহ খিলাল করা ।(তিরমিযী,হাদিস নং-৩৮)
১১, একবার সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ করা।(তিরমিযী, হাদিস নং-৩৪)
১২,উভয় কান মাসাহ করা । উল্লেখ্য , কানের ছিদ্রের মধ্য কনিষ্ঠ আঙ্গুল ঢুকিয়ে এবং ভিতর দিকে অবশিষ্ট অংশে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা মাসাহ করা ।(তিরমি্যী ,হাদিস নং-৩৩)
১৩,উযূর অঙ্গসমুহ হাত দ্বারা ঘষে মেজে ধোয়া।( মুস্তাদরাক, হাদিস নং-৫৭৬)
১৪, এক অঙ্গ ধোয়ার পর অন্য অঙ্গ ধৌত করতে বিলম্ব না করা ।( মুসলিম, হাদিস নং-২৪৩)
১৫, তরতীবের সাথে  উযূ করা । অর্থাৎ উযূর অঙ্গসমুহ ধোয়ার সময় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।( আবু দাউদ, হাদিস নং-১৩৭)
১৬, ডান দিকের অঙ্গ আগে ধোয়া ।( বুখারী শারিফ, হাদিস নং-১৬৮)
১৭, শীত অথবা অন্য কোন কারনে যখন  উযূ করতে ইচ্ছে না হয়, তখনও উযূর অঙ্গ সমুহ উত্তম রুপে ধুয়ে উযূ  করা।(তিরমিযী, হাদিস নং-৫১/ মুসলিম , হাদিস নং-২৫১)

১৮, উযূর মধ্য নিম্নোক্ত দু'আটি পড়াঃ

 উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসি লি ফি দারি, বারিক লি রিযক্বি( আমালুলয়াওমি ওয়াল লাইলাহ লি ইবনিসসুন্নী, হাদিস নং-২৮)

এবং উযূ শেষ করে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া। (মুসলিম শারিফ হাদিস নং-২৩৪)
অতঃপর এ দু'আ পড়া ঃ

উচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মাঝআ'লনি মিনাত তাউয়্যাবিনা ওয়াঝআ'লনি মিনাল মুতাত্বাহহিরিন।

উল্লেখ্য , গোসল এবং তায়াম্মুমের শুরু ও শেষে উযূতে বর্ণিত দু'আ পড়বে।

বিঃদ্রঃ শুধু এ সব বর্ণনা পড়ার  দ্বারা সুন্নাত তরীকায় উযূ করা সম্ভব নয়, আল্লাহ তা'আলা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হযরত জিব্রাঈল আ, এর মাধ্যমে সকল বিষয় চাক্ষুষভাবে দেখিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন( তিরমিযী, হাদিস নং-১৪৯) । তাই আমরা এই  জন্য কোন হাক্কানী আলেম থেকে সব বিষয় গুলো চাক্ষুষভাবে দেখে নিবে।

1 টি মন্তব্য:

  1. কিছু শিখতে পারলে অবশ্যই আপনার মতামত পেশ করে যাবেন । ধন্যবাদ

    উত্তরমুছুন