হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের সময়ের কিছু ঘটনা-- - ইসলাম আমাদের ধর্ম

বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের সময়ের কিছু ঘটনা--


হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর  আবির্ভাব


অধিকাংশ আলেমগ্ণ এই কথার উপর একমত যে, মহানবী (সাঃ) এর আবির্ভাব রবিউল আওয়াল মাসের সেই বছর হয়েছিল যে বছর 'আসহাবে ফীল' (হস্তী বাহিনী) কা'বা ঘর আক্রমন করেছিলো। আল্লাহ তা'আলা তাদের কে আবাবীল নামক নগন্য পক্ষিকুলের দ্বারা পরাজিত করেছিল। পবিত্র কোরআনে 'সুরা ফীলে সংক্ষিপ্ত ভাবে বর্ণনা রয়েছে।প্রকৃত  পক্ষে আসহাবে ফীলের ঘটনাটিও (১) মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র বেলাদত সম্পর্কিত বরকত সমুহের সুচনা স্বরূপ । মহানবী (সাঃ) সেই ঘরে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন যা পরবর্তী কালে হাজ্জাজের ভাই মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফের হস্তগত হয়। কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে আসহাবে ফীলের ঘটনা টি ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দে ২০ শে এপ্রিল সংঘটিত হয়েছিল। এতে বুঝা যায় যে , মহানবী (সাঃ) এর জন্ম হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্মের ৫৭১ বৎসর পরে হয়েছিল।


(ইয়ামনের বাদশাহ আবরাহ তার বিরাট হস্তী বাহিনী নিয়ে কাবা শরীফ ধ্বংস করতে এসেছিল ঃ এদের কে আসহাবে ফীল বা হস্তী বাহিনী বলা হয়।)


হাদিস শাস্ত্রের বিশিষ্ট ইমাম আল্লামা ইবনে আসকির (রঃ)পৃথিবীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে লিখেছেনঃ 


হযরত আদম (আঃ) ও নূহ (আঃ) এর মধ্যে ১ হাজার দুই শত বৎসরের  ব্যবধান ছিল এবং নূহ (আঃ) থেকে ইব্রাহিম (আঃ) পর্যন্ত ১১ শত ৪২ বৎসর ইব্রাহিম (আঃ) থেকে মুসা (আঃ) পর্যন্ত ৫৬৫ হযরত মুসা (আঃ) থেকে হযরত দাউদ (আঃ) পর্যন্ত ৫৬৯ বৎসর এবং হযরত ঈসা (আঃ) থেকে আখেরী নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর মধ্যে  ৬০০ বৎসরের ব্যবধান ছিল ।এই হিসাবে হযরত আদম (আঃ) থেকে আমাদের মহানবী  (সাঃ) পর্যন্ত ৫ হাজার ৩২ বৎসর । প্রসিদ্ধ বর্ণনা মতে হযরত আদম (আঃ) এর বৎসর ছিল ৪০ কম ১ হাজার অর্থাৎ ৯ শত ৬০ বৎসর । এজন্য  আদম (আঃ) দুনিয়াতে অবতরণের অন্তত ৬ হাজার বৎসর পরে অর্থাৎ সপ্তম সহস্রাব্দে হযরত আখেরী নবী (সাঃ) শুভাগমন করেছিলেন। (তারীখে ইবনে আসাকির , মুহাম্মদ ইবনে সহাকের উদ্ধৃতি  থেকে ১/১৯ , ২০ পৃঃ )


মোট কথা , যে বছর আসহাবে ফীল কা'বা আক্রমন করে, সে বৎসরেই ১২ই রবিউল আওয়াল (১) সোমবার দিনটি দুনিয়ার জীবনে এক অসাধারণ দিবস, যে দিবসে পৃথিবী সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য, রাত্র - দিন পরিবর্তনের আসল লখ্য, আদম (আঃ) ও বনি আদমের গর্ব, হযরত নুহ (আঃ) এর নৌকায় হেফাজতের নিগূঢ় ভেদ, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর দোয়া এবং মূসা (আঃ) ও ঈসা (আঃ) এর ভবিষ্যৎ দ্বানী সমুহের সত্যতা প্রমান কারী অর্থাৎ আমাদের মহানবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এই ধরণীতে শুভাগমণ করেন।


একদিকে পৃথিবীর আর্চনালয়ে নবুওতের সূর্য প্রকাশিত হল, আর অন্য দিকে পারস্য রাজ কিস্রার রাজ প্রাসাদের (২) ১৪ টি গুম্বুজ ধ্বসে পড়ে পারস্যের শ্বেত উপসাগর একেবারে শুকিয়ে যায়, পারস্যের অগ্নি মণ্ডপের হাজার বছরের প্রজ্জলিত অগ্নি স্বেচ্ছায় নিভে যায়, যা কখনও নির্বাপিত হয়নাই।

মুলতঃ এটি ছিল অগ্নি পূজা ও যাবতিয় গোমরাহীর সমাপ্তির পূর্ব ঘোষনা এবং পারস্য ও রোম রাজত্বের পতনের ইঙ্গিত।


সহীহ হাদিস সমূহে বর্ণীত আছে যে, (৩) মহানবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের সময় তাঁর সম্মানীত মাতার পেট থেকে এমন একটি নূর প্রকাশিত হয় যার দ্বারা পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম আলোকিত হয়ে যায়। কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে যে নবীজী (সাঃ) ভূমিষ্ট হয়ে উভয় হাতের উপর ভর দেয়া অবস্থায় ছিলেন অতপরঃতিনি এক   মুষ্টি মাটি তুলে আকাশের দিকে তাকালেন। 

                                                                                                              ( মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া দ্রঃ)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন